শিরোনাম

10/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

গলা ব্যথার বিভিন্ন উপসর্গ ও করণীয়

 গলাব্যথার বিভিন্ন উপসর্গ করণীয়



গলায়ব্যথা সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হলেও তা জটিল কোনরোগের পূর্ব লক্ষণ হতে পারে। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, ঋতু পরিবর্তন, বহুক্ষণ কথা বলা ইত্যাদি কারণে সমস্যাটি হয়ে থাকে। চলুন গলা ব্যাথার বিভিন্ন লক্ষণ, উপসর্গ করণীয় বিষয়েজেনে নিই।

 

গলায়ব্যথা সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা অন্য কোনজটিল অসুখের পূর্ব লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পেতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, ঠাণ্ডা লাগা, ঋতু পরিবর্তন, বহুক্ষণ কথা বলা ইত্যাদি কারণে যে কারও গলাব্যাথা হতে পারে। আসুন সমস্যাটির বিভিন্ন লক্ষণ, উপসর্গ করণীয় বিষয়েবিস্তারিত জেনে নিই।

 

গলাব্যথা কি

 

গলাব্যথা যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ফ্যারিঞ্জাইটিস (Pharyngitis) প্রধানত ঠান্ডা ফ্লু (ইনফ্লুয়েঞ্জা) এর জীবাণুর সংক্রমণেগলায় ধরণের সমস্যাহতে দেখা যায়। অনেক সময় গলা ব্যথার জন্য গলায় শুষ্ক চুলকানি হওয়া সহ  ঢোকগিলতে, কিংবা খাবার গিলতেও সমস্যা হয়ে থাকে।

 

গলাব্যথার কারণ সমূহ

 

গলাব্যথার জন্য অনেকগুলো কারণ দায়ী যার মধ্যে ভাইরাসজনিত অসু্স্থ্যতা যেমন ঠান্ডা, ফ্লু, মনোনিউক্লিওসিস(Mononucleosis) অন্যতম।অন্যান্য ভাইরাসজনিত অসু্স্থ্যতা যেমন- হাম, চিকেনপক্স এর সংক্রমনেও গলাব্যাথা হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমণ  যেমনটনসিলের সমস্যা ডিপথেরিয়ার কারণেওগলা ব্যাথা হয়ে থাকে। এছাড়া অন্যান্য কারনের মধ্যে এলার্জি জনিত সমস্যা,শুষ্ক আবহাওয়া, বিশেষ করে কোন কারণে শীতকালে ঘরের তাপমাত্রা বেশি গরম হয়ে যাওয়া, ধূমপান করা, অধিক মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া, গলার মাংসপেশীতে চাপ লাগা, এইচআইভি সংক্রমণ, মদপানের কারণে গলায় টিউমার হওয়া ইত্যাদি।

 

গলাব্যথার লক্ষণ সমূহ

 

গলাব্যথা হলে প্রধানত নিম্নের কতিপয় লক্ষণ উপসর্গসমূহ দেখাদেয়। যেমন-

 

গলায়খসখসে ভাব, চুলকানো এমনকি গলা ফুলেও যেতে পারে।

শ্বাসনেয়া, ঢোক গিলা কিংবা কথা বলার সময় গলায় ব্যথা অনুভূত হতে পারে।

ঠান্ডারজন্য গলা ব্যথা হলে এর সাথে শরীরেব্যথা সহ সর্দি, কাশি, হাঁচি জ্বর হতেপারে।

গলাব্যথার বিভিন্ন উপসর্গ

 

গলাব্যথা যদি মারাত্মক আকার ধারণ করে তাহলে টনসিল ফুলে যাওয়া সহ নিম্নের উপসর্গগুলোদেখা দিতে পারে। নিম্নের উপসর্গগুলো দেখা দেয়া মাত্রই ডাক্তরের কাছে গিয়ে সুচিকিৎসা নিতে হবে।

 

ঢোকগিলতে বা খাবার খেতেঅসুবিধা হওয়া।

বারবার গলা ব্যথা হওয়া।

বমিহওয়া।

শরীরেরবিভিন্ন জায়গায় ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া।

অতিরিক্তমাথা ব্যথা করা।

গলাব্যথা মরাত্মক আকার ধারণ করা।

গলারটনসিল ফুলে লালচে হয়ে যাওয়া।

মাসের নীচে বয়সী শিশুদের জ্বর ১০১ ফারেনহাইট এবং বড়দের ক্ষেত্রে তা ১০৩ ফারেনহাইটপর্যন্ত হয়ে যাওয়া।

অনেকসময় গলায় বা টনসিলে পুঁজওহতে পারে।

কাদেরগলায় ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি বেশি ?

 

নিম্নোক্তব্যাক্তিদের গলায় ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।

 

শিশু কিশোর-কিশোরীরা যারা ধুলা বালির সংস্পর্শে বেশি আসে।

যারাধূমপান কারী ব্যক্তি বা পরোক্ষ ভাবেযারা এর সংস্পর্শে আসেযেমন যারা ধূমপায়ী ব্যক্তির খুব কাছাকাছি থাকে।

যাদেরধূলা-বালি থেকে এলার্জির সমস্যা হয়।

যারাঘরে ব্যবহার করা জ্বালানী রাসায়নিক বস্তুরসংস্পর্শে আসে।

যাদেরদীর্ঘ সময় ধরে সাইনাসের সমস্যা রয়েছে।

যারাএকসাথে গাদাগাদিভাবে থাকে যেমন-শ্রেণীকক্ষ, অফিস ইত্যাদিতে। এখানে একজনের সমস্যা হলে দ্রুত তা অন্যদের মধ্যেছড়িয়ে পড়ে।

এছাড়াযাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদেরও এইসমস্যা বেশি হয়।

যেসবজীবন-যাপন পদ্ধতির মাধ্যমে গলা ব্যথা প্রতিরোধ করা সম্ভব

 

নিম্নোক্তনিয়ম কানুন মেনে চলার মাধ্যমে খুব সহজেই আমরা এই গলা ব্যাথারসমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারি। যেমন-

 

যতবারসম্ভব  সাবানদিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে।

অন্যেরব্যাবহার করা খাবার জিনিসপত্র যেমনগ্লাস, প্লেট,গামছা,,কিংবা তোয়ালেশেয়ার করা বাদ দিতে হবে।

অন্যেরব্যবহৃত টেলিফোন বা মোবাইল ব্যবহারথেকে বিরত থাকতে হবে।

একইপানির জগ বা গ্লাসমুখ দিয়ে স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

নিয়মিতটেলিফোন, টিভির রিমোট কম্পিউটার কী-বোর্ড পরিষ্কার করতে হবে।

অসুস্থব্যক্তি থেকে যতটুকু সম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে।

বাড়িরআবহাওয়া শুষ্ক থাকলে তা আদ্র রাখারব্যবস্থা করতে হবে।

হাঁচিবা কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই পরিষ্কার রুমাল ব্যবহার করা সহ নিয়মিত তাপরিষ্কার করে নিতে হবে।

ধূমপানকরা কিংবা ধূমপায়ী ব্যক্তিদের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে।

প্রচুরতরল জাতীয় খাবার যেমন- গরম চা পানি ফলের রস খেতে হবে।

ঠাণ্ডাজনিতসমস্যা হলে  একগ্লাস গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণমিলিয়ে তা দিয়ে গড়গড়াকরলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

ঠাণ্ডাজনিতসমস্যা এক গ্লাস খুবগরম পানিতে মধু এবং লেবু মিশিয়ে তা ঠান্ডা করেতারপর পান করা যেতে পারে।

যতটুকুসম্ভব কথা কম বলার চেষ্টাকরতে হবে।

সুস্থনা হওয়া পর্যন্ত  রোগীকেবাড়িতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।

গলাব্যথার চিকিৎসা

বেশীরভাগক্ষেত্রেই গলা ব্যথা সাধারণত এক সপ্তাহ অথবাকিছুদিন পর এমনিতেই ভালোহয়ে যায়।  তবেযদি এর প্রকোপ বেশীহয় তাহলে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা যেমন গলা পরীক্ষা (throat culture) অন্যান্য শারীরিকপরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। রোগের ধরণ জেনে  ডাক্তারেরপরামর্শ নির্দেশ অনুযায়ীনিয়মিত ঔষধ সেবন করতে হবে। এছাড়া  পর্যাপ্ততরল খাবার গ্রহণ, পর্যাপ্ত বাড়তি ঘুমাতেহবে। অনেক ক্ষেত্রে এ্যান্টিবায়োটিক সেবনেরও প্রয়োজন হতে পারে। 

গলাব্যথা একটি স্বাভাবিক শারীরিক সমস্যা। এই সমস্যায় কমবেশিসবাই ভুগে থাকেন। বিভিন্ন সময়ে নানা কারণেআমাদের গলায় ব্যথা হতে পারে। তাই সাবধানে থাকা সহ সঠিকভাবে জীবনযাপন করার মাধ্যমে এই সমস্যা থেকেদূরে থাকার চেষ্টা করা উচিত।

Post a Comment

0 Comments